মানসিক রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা
আপনি কি মানসিক রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা জানতে চান? বন্ধুরা আমাদের আজকের আর্টিকেলটি হচ্ছে মানসিক রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা। মানসিক রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা উক্ত আর্টিকেলটিতে আমরা মানসিক রোগের লক্ষণ, মানুষকে রোগের তালিকা, এবং এর চিকিৎসা সম্পর্কে আলোচনা করব।
পোস্ট সূচিপত্র ঃ মানসিক রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা
- মানসিক রোগের ঔষধের নাম
- মৃদু মানসিক রোগের লক্ষণ
- মানসিক রোগের নাম ও লক্ষণ
- মানসিক রোগ থেকে মুক্তির উপায়
- মানসিক রোগের সমাধান
- মানসিক রোগের তালিকা
মানসিক রোগের ঔষধের নাম
আমরা অনেকেই মানসিক রোগের ঔষধের নাম সম্পর্কে জানি না। না জানার কারণে বিভিন্ন সময়ে নানা সমস্যার শিকার হতে হয়। বন্ধুরা দিন দিন আমাদের দেশে মানসিক রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।ধরতে গেলে আমরা কম বেশি সবাই মানসিক রোগী কোন না কোন দিক দিয়ে।
কিছু কিছু সাধারণ মানুষ মানসিক রোগের উপসর্গগুলোকে জিন ভুতের আসর বা জাদু টোনা বলে আখ্যায়িত করে। কিছু কিছু গ্রাম অঞ্চলের লোকজন কবিরাজের কাছে যায় পানি পড়া বা তাবিজ নেয়ার জন্য। কিন্তু এগুলো সব কুসংস্কার বা অজ্ঞতা কথাটি মনে রাখবেন। মানসিক রোগের ওষুধের ক্ষেত্রে আমাদের দেশে কিছু ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে যে এই রোগের ওষুধ খেলে ব্রেন নষ্ট হয়ে যায়, মস্তিষ্ক আর স্বাভাবিক কাজ করে না ইত্যাদি ইত্যাদি।
একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা মনে রাখবেন, যে কোন রোগের ঔষধ আবিষ্কার হওয়ার পর সেটাকে নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা গবেষণা না করে সেটা বাজারজাত কখনোই করা হয় না। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর কেবল বাজারজাতকরণের অনুমতি পায়। মানসিক রোগের ঔষধের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম নয়।প্রতিটি ওষুধ ই সুষ্ঠু প্রক্রিয়া যুক্ত। আমরা যেসব কমন ঔষধ সেবন করি যেমন জ্বরের জন্য নাপা, প্যারাসিটামল এই ওষুধগুলোও কিন্তু পার্শ্বপ্রতিকরা বিহীন নয়। অর্থাৎ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াবিহীন ওষুধ পাওয়া যাবে, এটা কখনোই মনে করবেন না।
আরো পড়ুন মানুষের চোখ কত মেগাপিক্সেল - মানুষের চোখ কত ডিগ্রি কোণে দেখে
মানসিক রোগের ওষুধের ব্যাপারে আমাদের দেশের লোকজনের রয়েছে কিছু নেতিবাচক প্রভাব। যেমন কেউ কেউ মানসিক রোগের ওষুধ সেবনের পর রোগী সুস্থ হলে ওষুধ খাওয়া ছেড়ে দেয়। কয়েকদিন পর সেই জ্বর আবার ফিরে আসে। আবার কেউ কেউ ওষুধ ছাড়া সাইকো থেরাপি বা কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে রোগীকে সুস্থ করার চেষ্টা করে। কোন ধরনের রোগীর জন্য কোন চিকিৎসা দেওয়া ঠিক হবে শুধুমাত্র ডাক্তার এই সিদ্ধান্ত নিবে। মনে রাখতে হবে মানসিক রোগ কোন স্বাভাবিক রোগ নয়। এই রোগের ওষুধ কারো কাছ থেকে শুনে বা কোন পোস্টে দেখে গ্রহণ করা যাবে না। তাই মানসিক রোগীদের ডাক্তারের পরামর্শ ওষুধ সেবন করা উচিত।
মৃদু মানসিক রোগের লক্ষণ
মৃদু মানসিক রোগের লক্ষণ গুলো সম্পর্কে কি আপনি জানেন? এবার এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।মানসিক রোগের মধ্যে মানসিক অবসাদ হচ্ছে উল্লেখযোগ্য। মৃদু মানসিক রোগীরা সাধারণত বিভিন্ন ধরনের ভুল ডিসিশন নিয়ে থাকে। এরা স্বাভাবিক চিন্তা ধারায় চলাফেরা করে না। চলুন মৃদু মানসিক রোগের লক্ষণ গুলো জেনে নেয়া যাক।
- এ রোগে আক্রান্ত রোগীরা আত্মহত্যার পথ সহজেই বেছে নেয়।
- দুই সপ্তাহ বা এর বেশি সময় ধরে তাদের মন খারাপ থাকে।
- রাতে ঘুম কম হবে বা ঘুম আসলেও হঠাৎ করে ঘুম ভেঙে যায় এবং নানা ধরনের চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খায়।
- খুব অল্প সময়েই তাদের মেজাজ খারাপ হয়ে যায়।
- কোন বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনা।
- তাদের শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায় বা ওজন খুব কমে যায়।
- মানসিক অবসাদ তাদের এমন ভাবেই ঘিরে রাখে যে তা থেকে মুক্ত হওয়ার কোন পথ খুঁজে পায় না।
মানসিক রোগের নাম ও লক্ষণ
আগেই আমি বলেছি আমরা সবাই কমবেশি মানসিক রোগী। যেমন দাঁত দিয়ে সাধারণত নখ কাটা অভ্যাসটিও কিন্তু ভয়ঙ্কর একটি মানসিক রোগ। আবার মিথ্যা বলার অভ্যাসটিও কিন্তু একটি মানসিক রোগ। জেনে নিন ভয়ংকর তিনটি মানসিক রোগের নাম।
- অটোফ্রাজিয়া
- মিথোম্যানিয়া
- কোটার্ড সিনড্রোম
মানসিক রোগের লক্ষণ
- আক্রমণাত্মক আচরণ বেড়ে যায়।
- কোন কাজের হিতাহিত জ্ঞান থাকেনা।
- নিশ্চুপ হয়ে যায়, ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করে না।
- একা একা কথা বলে, একা একা হাসে।
- কিছু ভালো না লাগা, অস্থিরতা, অনিদ্রা এ রোগের লক্ষণ।
মানসিক রোগ থেকে মুক্তির উপায়
আমরা অনেকেই মানসিক রোগ থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে জানি না। তাই উক্ত বিষয়ে এবার আলোচনা করব। বর্তমান যুগে মানসিক চাপ দৈনন্দিন জীবনের একটি অভিচ্ছন্ন অংশ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। হোক সেটা দুশ্চিন্তা ক্লান্তি বা একঘেয়ে জীবন। আমরা জানি মন এবং শরীর একই সুতই গাথা। মন ভালো না থাকলে শরীর ভালো থাকে না। অন্যদিকে শরীর ভালো না থাকলে মন ভালো থাকে না।
আরো পড়ুন মুমিনের বৈশিষ্ট্য - মুমিনের ১০ টি বৈশিষ্ট্য
তাই আমাদের শরীর ভালো রাখতে হলো মন ভালো রাখতে হবে। এই মন ভালো রাখার জন্য আমাদের মানতে হবে কিছু নিয়ম কানুন। এবারে চলুন এই সম্পর্কেই আমরা একটু ধারণা নিই। মানসিক রোগ থেকে বাঁচতে আপনাকে কিছু কিছু অভ্যাস করে নিতে হবে। যেমন
- মানসিক রোগ থেকে মুক্তি পেতে সকালে হাঁটার অভ্যাস করুন। এই ব্যায়াম শরীরসহ মানসিক অবস্থা ভালো রাখে।
- এই রোগ থেকে বাঁচতে মেডিটেশন খুবই কার্যকারী একটি পন্থা। মেডিটেশন মানুষের মনকে শান্তি দেয়।
- এছাড়াও মেডিটেশন মানুষের মাংসপেশীকে শিথিল করে।
- মানসিক রোগ থেকে মুক্তি পেতে সবচেয়ে ভালো ওষুধ হিসেবে কাজ করে ঘুম। ঘুম মানুষের সারাদিনের ক্লান্তিকর অবস্থা কাটিয়ে মনকে রাখে প্রফুল্ল।
- এছাড়াও মানসিক চাপ কমাতে আপনি পরিমিত পরিমাণের সুষম খাদ্য, ফল মূল, শাকসবজি, বিশুদ্ধ পানি পান করতে পারেন। খাবার ক্ষেত্রে ভাজাপোড়া বা ফাস্টফুড জাতীয় বাইরের খাবার থেকে দূরে থাকুন।
- এছাড়াও মানসিক রোগ থেকে বাঁচতে আপনাকে অ্যালকোহল জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে।
মানসিক রোগের সমাধান
মানসিক রোগের সমাধানের জন্য সবচেয়ে বেশি ভালো কাজ দেয় ঘুম। সারাদিনের ক্লান্তি দূর করে মনকে রাখে শান্ত, প্রফুল্ল। তাই মানসিক রোগের সমাধান হিসেবে ঘুমের গুরুত্ব অপরিসীম। এছাড়াও এই রোগ থেকে বাঁচতে সুষম খাদ্য যেমন ফলমূল, শাকসবজি ইত্যাদি খাবার গ্রহণ করতে হবে। এই রোগের ক্ষেত্রে শারীরিক ব্যায়াম বা মেডিটেশন খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
মানসিক রোগের তালিকা
বন্ধুরা এই কর্মব্যস্ততা পূর্ণ জীবনে চলার পথে যে কোনো সময়ে ছোট বড় মানসিক সমস্যায় আমরা প্রায়ই ভুগে থাকি। আমাদের বিশ্বের এমন কিছু মানসিক রোগ রয়েছে যার নাম আমরা কখনো শুনি নাই। আজকে কয়েকটি মানসিক রোগের নাম জেনে নেব। যেমন
- বোনথ্রপি
- জেরুসালেম সিনড্রোম
- ফরেইন অ্যাকসেন্ট সিনড্রোম
- কোটার্ড সিনড্রোম
- অটোফাজিয়া
- অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড সিনড্রোম
- ইরোটো ম্যানিয়া ইত্যাদি।
আরো পড়ুন হিজামা কিভাবে করা হয় - হিজামা কোথায় করা হয়
প্রিয় পাঠক আশা করছি মানসিক রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে। মানসিক রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন। আমাদের ওয়েবসাইটে মানসিক রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা এই ধরনের আরো চিকিৎসা মূলক আর্টিকেল পাবেন। নিত্য নতুন আর্টিকেলতে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করতে পারেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি। কথা হবে অন্য কোন আর্টিকেলে অন্য কোন নতুন বিষয় নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ। ২৩২৬১
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url